রাজবাড়ীর পাংশা মাস পার হলেও হত্যা মামলার আসামিরা ধরা ছোয়ার বাইরে ।। বাদীকে মামলা তুলে নিতে হুমকি থানায় জিডি                       

পাংশা নিউজ

রাজবাড়ী প্রতিনিধি: রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নের কেওয়া গ্রামের বাসিন্দা আকমল হোসেন পাশ্ববর্তী ঝিনাদাহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার খুলুম বাড়ী বাজার এলাকায় নদীর চরে প্রকাশ্যে ভাগ্নের হাতে খুণ হয়। জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে মামা আকমল হোসেনকে গামছা পেচিয়ে হত্যা করে ভাগিনা ইউনুচ মন্ডল, সে ঝিনাদাহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার শাহাবাড়ীয়া গ্রামের ইমদাদুল মন্ডলের ছেলে। 

এ ঘটনায় ৬ জুলাই নিহতের ছেলে আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে শৈলকুপা থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখ্য সহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনের নামে ধারা ১৪৩/৩৪১/৩০২/৩৪/১১৪ পেনাল কোড অনুযায়ী মামলা দায়ের করেছে। মামলার এজহার সুত্রে জানাগেছে ৪ জুলাই দুপুরে আকমল হোসেন শৈলকুপা উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের খুলুম বাড়ীয়া বাজারে যাওয়ার উদ্দ্যেশে বাড়ী থেকে বের হয়ে ওই ঘাটে পৌছার সাথে সাথে পূর্বে থেকে ওৎ পেতে থাকা এজহার নামীয়  ও অজ্ঞাত ৪/৫ মিলে আকমল হোসেনকে গলাই গামছা পেচিয়ে মেরে ফেল বলে মামলার এজহারে উল্লেখ্য করা হয়েছে।

মামলার বাদী ও নিহত আকমল হোসেনের ছেলে আবুল কালাম আজাদ বলেন- আমার ফুফাত ভাই ইউনুসকে ব্যবহার করে আমার পিতাকে হত্যা করা হয়েছে মূলত দির্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল আমার চাচাত ভাইদের সাথে তাদের এ জমি নিয়ে ২টি মামলাও চলমান রয়েছে। এ ঘটনার নায়ক ওছিয়ার খা, আনছার খান আমার বাবাবে হত্যার সময় তারা উপস্থিত ছিল তাদের সার্বিক তত্বাবধায়নে পরিকল্পিত ভাবে আমার পিতাকে হত্যা করেছে, ইতি পূর্বেও এ জমি নিয়ে ওছিয়ার খা, আনছার খা আমাদের প্রাণ নাশের হুমকি দিয়েছিল।

এ হত্যা কান্ডের ৪ দিন আগে গত রবিবার আমার ফুফাত ভাই আমার চাচাত ভাইদের কথায় আমাদের এলাকায় এসে আমার বাবার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছিল, তার ঠিক ৪ দিন পর শুক্রবার আমার বাবাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করল ওরা। দির্ঘ ২০ বছর আগেই ফুফুদের জমির বিষয়টা মিমাংশিত  ক্রয় বিক্রয় শেষ, সে দলিলও আমাদের নিকট রয়েছে, ওছিয়ার খা, আনছার খার প্রত্যক্ষ মদদে আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে, এ হত্যার সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবী করছি ।

ক্ষোভ প্রকাশ করে নিহতের ছেলে মামলার বাদী আবুল কালাম আজাদ বলেন দির্ঘ এক মাস পার হলেও এ মামলার কোন আসামী গ্রেফতার হয়নি, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি প্রকাশ্যে একটি হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন আসামী গ্রেফতার না হওয়ার পেছনে কি রহৎ রয়েছে। আমি দ্রুত সময়ের মধ্যে আমার পিতার হত্যাকারীদের গ্রেফতারের জোর দাবী করছি। বাবা হারানো ব্যাথা সেই বুঝে যার বাবা নেই পৃথিবীতে।

এদিকে মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন মাধ্যমে আমাকে হুমকি ধুমকি দিয়ে আসছে সবশেষ আমি মামলা তুলে না নিলে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে, এ বিষয়ে আমি নাম উল্লেখ করে ৩ আগষ্ট পাংশা মডেল থানায় জিডি করেছি যার নাম্বার ১১৯।

এ মামলার এজহার নামীয় একজন আসামী শৈলকুপা থানার বাকি সকল আসামী রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নের বাসিন্দা। স্থানীয়দের দাবী পাংশা ও শৈলকুপা থানা পুলিশের যৌথ প্রচেষ্ঠায় এ হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতার করা হোক।

নিহতের স্ত্রী সেলিনা পারভীন বলেন আমার স্বামী নিরিহ কৃষক তাকে পরিকল্পনা করে মারা হয়েছে, আমরা কি আমার স্বামী হত্যার বিচার পাব না, আমি আইনের কাছে বিচার কামনা করছি। নিহতের ছোট ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন আমার চাচা ও চাচাত ভাইদের পরিকল্পনায় আমার আপন ফুফাতো ভাই ইউনুসকে দিয়ে মারা হয়েছে, ১ মাস পার হলেও কোন আসামি কে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ, অভিযোগের সুরে বলেন আমার বাবা কৃষক আমরা কৃষকের সন্তান তাই আমরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত, মিডিয়ার ম্যাধমে বলতে চাই আমার বাবার হত্যাকারীরা এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে অথচ পুলিশ তাকে বলে খুজে পাচ্ছে না, আমার বাবার হত্যাকারীদের সঠিক বিচার হবে বলে বিশ্বাস করি।

এ ব্যাপারে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুম খান বলেন- আমরা তদন্ত সাপেক্ষে আসামীদের গ্রেফতারে চেষ্ঠা করছি তবে এখন পর্যন্ত এ মামলায় কেউ গ্রেফতার হয়নি। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামীরা গ্রেফতার হবে, মামলার প্রধান আসামীসহ সকল আসামি এলাকা ছাড়া আমরা চেষ্টা করছি আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামীরা গ্রেফতার হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *