আন্তর্জাতিক ডেস্ক | পাংশসংবাদ.কম
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট ভেনেজুয়েলার অভিযুক্ত ‘গ্যাং সদস্যদের’ তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
উত্তর টেক্সাসে আটক ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনার বিরুদ্ধে একটি মানবাধিকার সংগঠন মামলা দায়ের করলে, আদালত এই নির্দেশ জারি করে। আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত কোনো বন্দিকে যেন ফেরত পাঠানো না হয়।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করেছিলেন যে ভেনেজুয়েলার কুখ্যাত গ্যাং ‘ট্রেন দে আরাগুয়া’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে হামলার হুমকি দিচ্ছে। এর জেরে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আবারও ‘এলিয়েন এনিমিজ অ্যাক্ট’ ব্যবহার করে শত শত ভেনেজুয়েলার নাগরিককে এল সালভাদরে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
৮ এপ্রিল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত ২৬১ জন ভেনেজুয়েলার নাগরিকের মধ্যে ১৩৭ জনের বিরুদ্ধেই সরাসরি এই যুদ্ধকালীন আইন প্রয়োগ করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ১৭৯৮ সালের এই আইন সর্বশেষ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত হয়েছিল, যখন জাপানি বংশোদ্ভূত মানুষদের বিচার ছাড়াই আটক করে ইন্টার্নমেন্ট ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছিল।
গত মার্চ মাসে একটি নিম্ন আদালত এই বহিষ্কারাদেশ স্থগিত করেছিল। পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্ট শর্তসাপেক্ষে ট্রাম্প প্রশাসনকে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয় এবং ফেরত পাঠানোর আগে আটক ব্যক্তিদের আপিলের সুযোগ দিতে বলা হয়।
এদিকে, অভিযোগ উঠেছে যে ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের ইংরেজিতে নোটিশ পাঠিয়ে এবং ভাষাগত সহায়তা প্রদান না করে তাদের ন্যায্যতার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন আদালতে জানিয়েছে, এভাবে অনেকের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।
এই বিতাড়ন প্রক্রিয়ার সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা হলো, ভুল করে এল সালভাদরের নাগরিক কিলমার আব্রেগো গার্সিয়াকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। যদিও সরকার তাকে এমএস-১৩ গ্যাংয়ের সদস্য বলে দাবি করেছে, তবে তার পরিবার এই দাবি অস্বীকার করেছে এবং তার বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সুপ্রিম কোর্ট তাকে ফেরত আনার নির্দেশ দিয়েছে, তবে ট্রাম্প প্রশাসন জানিয়েছে যে আব্রেগো গার্সিয়া আর কখনো যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতে পারবেন না। মেরিল্যান্ডের ডেমোক্র্যাট সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন এল সালভাদরের একটি নতুন কারাগারে গিয়ে তার সাথে দেখা করেছেন।
ট্রাম্প তার দ্বিতীয় অভিষেক ভাষণে ‘সব বিদেশি গ্যাং ও অপরাধী নেটওয়ার্ক’ নির্মূলের অঙ্গীকার করেছিলেন এবং এই বিতাড়ন সেই প্রতিশ্রুতিরই অংশ বলে মনে করা হচ্ছে।

