স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট:
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, সরকার দেশের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করতে এবং সেগুলোর সংস্কারে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) অথবা জিটুজি (সরকার টু সরকার) পদ্ধতির বিনিয়োগের মাধ্যমে নতুন সুযোগ তৈরি করতে চায়।
রোববার (২৩ মার্চ) ডাক ভবনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলারের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকালে বিশেষ সহকারী এই মন্তব্য করেন। সাক্ষাৎকালে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরীসহ বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার (২৪ মার্চ) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার নীতি কাঠামো, ইইউর বিনিয়োগ, বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থায়ন এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, ইইউ বাংলাদেশের অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য উন্নয়ন অংশীদার এবং বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য তারা প্রস্তুত রয়েছে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার ডিজিটাল রূপান্তরের একটি মাস্টার প্ল্যান এবং আইসিটি রোডম্যাপের খসড়া প্রস্তুত করেছে এবং অনুরূপ রোডম্যাপ প্রতিটি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের জন্য জনগণের সামনে উপস্থাপন করা হবে। তারা সরকারি সেবাগুলোর ডিজিটালাইজেশন, বিকেন্দ্রীকরণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি সহ মোট দশটি স্তম্ভকে লক্ষ্য ধরে এগোচ্ছেন।
ডেটা এক্সচেঞ্জ এবং ডেটা গভর্নেন্স সম্পর্কে সরকারের একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্টে সরকার বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। এছাড়াও, সাইবার নিরাপত্তা অধ্যাদেশ এবং ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন নিয়েও কাজ চলছে বলে তিনি জানান।
রাষ্ট্রদূত মিলার ডিজিটাল রূপান্তরের কৌশল সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশেষ সহকারী জানান, এই কৌশলের মাস্টার প্ল্যান তৈরির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের পরামর্শ নেওয়া হবে এবং আশা করা যাচ্ছে এ বছরের মাঝামাঝি সময়ে এটি একটি পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে।
ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন নিয়ে আরও কিছুদিন কাজ করার পর চারটি স্তরে জনসাধারণের মতামত নেওয়া হবে বলে জানান ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। প্রথম পর্যায়ে ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, এরপর স্থানীয় ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, মানবাধিকার সংস্থা ও গণমাধ্যম কর্মী এবং সবশেষে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের পরামর্শ ও মতামত গ্রহণ করা হবে। আইসিটি এবং সাইবার সম্পদগুলোর মানোন্নয়ন সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। পাশাপাশি, এই কার্যক্রম শুধুমাত্র সরকারি সংস্থার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সকল আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং সরকারি কর্মচারীদের অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়াও, ক্রিটিক্যাল ইনফরমেশন ইনফ্রাস্ট্রাকচারের (সিআইআই) ওপর বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি এই ক্ষেত্রে ইইউ এবং ই-গভর্নেন্স টিমের কাছ থেকে প্রশিক্ষণের প্রস্তাব প্রত্যাশা করেন। একইসঙ্গে, প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগের জন্য তিনি ইইউ রাষ্ট্রদূতকে আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত মিলার ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে অংশগ্রহণের জন্য প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবকে আমন্ত্রণ জানান।

